ব্লগ পোস্ট

রাউটার কি? রাউটারের সুবিধা ও কাজ সম্পর্কে জানুন

Raqib4you

নিজেদের বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন ইন্টারনেট তো হরহামেশাই ব্যবহার করছেন। ইন্টারনেট ছাড়া তো রীতিমতো আমরা এখন একদিনও চলতে পারিনা।  এখন নিজেদের ল্যাপটপে কিংবা স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য রেগুলার বেসিসে রাউটার ব্যবহার করলেও কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে যে রাউটার কি? 

আসলে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে বর্তমানে অনেক কিছু ব্যবহার করছি ঠিকই, কিন্তু যখনই আমাদের কাছ থেকে এগুলো সম্পর্কে কোন তথ্য জানতে চাওয়া হয়, তখনই আমরা ঠিকমতো উত্তর দিতে পারি না৷ রাউটার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস৷ এ কারণে আজকে আপনাদেরকে জানাবো রাউটার কি ও রাউটারের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত। একইসাথে আজকের এই লেখা থেকে আপনারা জানতে পারবেন বহুল জনপ্রিয় পকেট রাউটার সম্পর্কেও। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

রাউটার কি?

রাউটার বলতে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছোট্ট চারকোনা একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র। যেটির সুইচ অন করে দিলে আমরা নিমিষে আমাদের স্মার্টফোন কিংবা ট্যাবলেটের সাথে ইন্টারনেট কানেক্ট করতে পারি। তাই খুব সহজ ভাষায় রাউটার কি সে প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে রাউটার এমন এক ধরনের যন্ত্র যেটি আমাদের ইন্টারনেট  ব্যবহার করতে সহায়তা করে।

রাউটারের কাজ কি 
রাউটারের কাজ কি

এবার বিজ্ঞানের ভাষায় রাউটারের সংজ্ঞা দেই৷  রাউটার হচ্ছে এমন একটি হার্ডওয়ার ডিভাইস যেটিকে  অনেকের নেটওয়ার্কিং ডিভাইস নামেও ডাকেন। এক একটি রাউটারে মূলত পাঁচটি উপাদান থাকে। যেগুলো হলো সিপিউ, ফ্ল্যাশ মেমোরি, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস, র‍্যাম ও নন ভোলাটাইল র‍্যাম।

এখন প্রশ্ন হল রাউটারকে কেন নেটওয়ার্কিং ডিভাইস বলা হয়? এটির উত্তর হচ্ছে  রাউটারের সাহায্যে একাধিক কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে কানেকশন কিংবা সংযোগ স্থাপন করার কাজটি করা হয়। অর্থাৎ যে লাখ লাখ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এভেইলেবেল রয়েছে সেগুলো একটির সাথে অপরটি কানেক্টেড রাখতে রাউটার সক্রিয়ভাবে কাজ করে। রাউটারের সাহায্যে একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ইন্টারনেট ডাটা বিভিন্ন কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ফরওয়ার্ড করা হয়।  অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে একটি কানেক্টিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে রাউটার। রাউটার ইলেকট্রিসিটির মাধ্যমে চলে বলে এটি একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসও বটে। 

রাউটার আবিষ্কার হওয়ার ইতিহাস 

এটি কি তা তো জেনে নিলেন। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক কিভাবে এটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। ১৯৭২ সালের দিকে মানুষের মাথায় সর্বপ্রথম রাউটারের মতো একটি নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়ার তৈরির কথা মাথায় আসে। তবে তখনই কিন্তু রাউটার আবিষ্কার হয়নি। তখন রাউটারের মতো একটি মডেল তৈরি হয়েছিল যেটিকে গেটাওয়ে বলা হত। পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে জিনি স্ট্র‍্যাটাইজার ও তার টিম রাউটারের একটি উন্নত মডেল তৈরি করেন। 

রাউটার কত ধরণের হয়?

সব রাউটার কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং করার কাজে ব্যবহৃত হলেও রাউটারের প্রকারভেদ কিন্তু বিভিন্ন রকম। যেমনঃ

১। তারযুক্ত রাউটার 

তারযুক্ত রাউটারকে ওয়্যারড রাউটারও বলা হয়৷ এই রাউটারের সাথে ব্রডব্যান্ড সংযোগের তারের পাশাপাশি অন্য প্রতিটা যন্ত্রই তার দিয়ে কানেক্ট করা হয়। এই রাউটারের সাহায্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট পাওয়া যায় বলে এটি অফিসে বেশি ইউজ করা হয়। 

২। তারবিহীন রাউটার

তারবিহীন রাউটারকে ওয়্যারলেস রাউটার বলে যেটিতে ব্রডব্যান্ড কানেকশনের তার ছাড়া অন্য কোনো তার থাকেনা৷ এই রাউটারে ডাটা প্যাকেজ রেডিও তরংগের সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট এরিয়ার মধ্যে ছড়িয়ে যায়, যার কারণে আমরা আমাদের ফোন কিংবা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি। 

৩। এজ রাউটার 

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা একটি আইএসপি লেভেলের কম্পিউটার নেটওয়ার্কের এক প্রান্তের সাথে আরেকটি নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করতে এজ রাউটার ব্যবহার করেন। 

৪। কোর রাউটার 

এই রাউটারটি মূলত বড় কোনো কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এটি যেমন শক্তিশালী তেমনই দামী। 

৫। পকেট রাউটার 

পকেট রাউটারকে অন্য ভাষায় পোর্টেবল ওয়াইফাই রাউটারও বলা হয়ে থাকে। অন্যান্য রাউটারের সাথে পকেট রাউটারের পার্থক্য হচ্ছে এটি আকার ও ওজনে বেশ ছোট হয়ে থাকে। যদি আপনি পকেট রাউটার ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে একটি সিম কার্ড। হঠাৎ আপনি যে সিম কার্ডটি কাউকে ফোন করার জন্য ব্যবহার করে থাকেন, সেটি দিয়েই আপনি পকেট রাউটার ব্যবহার করতে পারবেন। পকেট রাউটার অন করে তারপর ওয়াইফাই কানেকশন অন করার সাহায্যে এটি আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। 

রাউটারের কাজ কি? 

এটির মূল কাজ হলো আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহার করা কাজটিকে সহজ করে দেয়া। বর্তমানে রাউটারের সাহায্যে মাত্র একটিমাত্র ডিভাইস ব্যবহার করে আমরা আমাদের বাড়িতে ল্যাপটপ, ফোন কিংবা স্মার্ট টিভিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছি। এতে করে যেমন আমাদের অর্থ সাশ্র‍য় হচ্ছে তেমনিভাবে আমরা খুব সহজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজ করে ফেলতে পারছি। 

এটির মাধ্যমে আপনি কতটুকু সীমা কিংবা রেঞ্জের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান সেটি বাড়াতে ও কমাতে পারবেন। শুধু তাই নয়, আপনি যদি চান কোন ডিভাইস এই রাউটার থেকে ইন্টারনেট সুবিধা নিতে পারবে না, আপনি সেটিও করতে পারবেন। মোটকথা আমাদেরকে সুবিধামতো ইন্টারনেট ব্যবহার করার দারুন সুযোগ করে দিয়েছে এই রাউটার। 

রাউটারের দাম কত?

রাউটারের দাম কত? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় বর্তমানে আপনারা বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন রাউটার খুঁজে পাবেন।  তবে একটি ভালো মানের রাউটার কেনার জন্য আপনাকে ক্ষেত্রবিশেষে খরচ করতে হতে পারে দেড় হাজার থেকে তিন হাজার টাকার মত। যদি যত্নের সাথে ব্যবহার করেন তাহলে একটি রাউটার অনেক বছর ধরে ব্যবহার করা যায়।

এটুকুই ছিল আজকের আলোচনা। আশা করছি আপনার রাউটার কি, রাউটারের কাজ এবং রাউটারের দাম কত হতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। এমন আরো আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদের সাথেই থাকুন এবং লেখাটি নিজের পরিবার পরিজনদের সাথে শেয়ার করুন।

 

About

Raqibul Mia

Pure Digital Marketing Specialist with more than 6 years of working experience. SEO | SMM | PPC | Email Marketing | Affiliate Marketing | Sales, for both Simplified and advanced Work